চরম সফল ১০ ব্যক্তিত্ব যারা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছিলেন - ক্যারিয়ার টিপস

Breaking

ক্যারিয়ার টিপস

ক্যারিয়ারে সফলতার জন্য সিভি লিখন, ভাইভা টিপস ও চাকুরীর খবর

Post Top Ad

চরম সফল ১০ ব্যক্তিত্ব যারা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছিলেন

বিশ্বের সফল মানুষগুলো সব সময় সফলতার চেহারা দেখেননি। তারাও বহুবার ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থতা থেকেই তারা পরিবর্ততিতে সফলকাম হওয়ার সঠিক উপায় খুঁজে পেয়েছেন। এখানে বিশেষজ্ঞরা পৃথিবীর ১১ জন চরম সফল মানুষের কথা তুলে এনেছেন। এরা ব্যর্থতা থেকে কী শিক্ষা নিয়েছেন তাই জানুন।

১. ২০১২ সালে যখন অপরাহ উইনফ্রের নেটওয়ার্কের রেটিংয়ের পতন ঘটছিল তখন তিনি ভাবছিলেন, এই ব্যর্থতা আসলে এক ধরনের ভ্রম। তার মতে, ভুল এমনই এক বিষয় যা আমাদের ভুল পথ থেকে সরিয়ে সঠিক পথে পরিচালিত করে। আর সেই সঠিক পথে চলে তিনি ২০১৩ সালের মধ্যেই তার নেটওয়ার্ককে লাভজনক প্রজেক্টে নিয়ে আসেন। ২০১৩ সালে হার্ভার্ডে এক বক্তব্যে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।

২. মাইক্রোসল্যুশন, ডালাস মেভরিকস এর মালিক মার্ক কিউবান একজন বারটেন্ডার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সিএনএন-এ এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আপনি কতবার ভুল করলেন তা কোনো বিষয় নয়। মনে রাখতে হবে, একবার হলেও আমাকে সঠিক পথটি বের করতে হবে। আর আমি তাই করেছি।

৩. হার্ভার্ড থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর ফেসবুকের বর্তমান বিজ্ঞাপনের প্রধান ক্যারোলিন এভারসন চেয়েছিলেন পেটস ডট কম নামের নিজের প্রতিষ্ঠানটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এই প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো ভালো চাকরির প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেন। কিন্তু বিফলতা দেখা দেয় জীবনে। নিজের প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দিলেও হতাশ হননি তিনি। নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যান এবং খুব শিগগিরই অন্য বড় প্রতিষ্ঠানের সম্পদে পরিণত হন।

৩. ডাইসন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা স্যার জেমস ডাইসন নিজের ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে সৃষ্টিশীলতার উন্মেষ ঘটান। হাজার বার বিফলতায় পর্যবসিত হওয়ার পরও তিনি সৃষ্টিশীল হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। অবশেষে ভুলগুলোই তাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দিলো। আর তারই পথ ধরে আজ তিনি মাল্টি বিলিওনিয়ার।

৪. ‘রিজনেবল ডাউট’ ছিলো জে জেড এর প্রথম অ্যালবাম। এটিকে অনেকেই র‍্যাপ সঙ্গীতের সর্বকালের সেরা অ্যালবামের একটি বলে মত দিলেও প্রথমে তা বোঝা যায়নি। জে দেখেছিলেন ব্যর্থতার ছায়া। কিন্তু দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ইন মাই লাইফটাইম, ভল. ১’ এর মাধ্যমে ভুলগুলো শুধরে নিলেন। আর তখনই দেখলেন ব্যাপক সফলতা। নিজেই জানান, প্রথম অ্যালবামের যে বিষয়গুলোকে ব্যর্থ মনে হয়, দ্বিতীয় অ্যালবামে সেগুলোকেই সফল করার চেষ্টা করলাম। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছিলাম।

৫. হ্যারি পটার সিরিজের লেখিকা জে কে রাউলিং ১৯৯৩ সালেও ব্যর্থ জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু থেকে থাকেননি। ২০০৮ সালে হার্ভার্ডে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, আগের ব্যর্থতা থেকে শিখে পরের কাজগুলোতে তা ঠিক করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। তার মতে, ব্যর্থতা মানে অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে বাদ দেওয়া। তাই এই উপায়ে পরের কাজগুলো করলাম। আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করলাম পরের কাজ করার জন্য। আর এখনো আমি বেঁচে আছি এবং সফলতার মুখ দেখেছি।

৭. মাইক্রোসফটের আরেক প্রতিষ্ঠাতা পল অ্যালেন সব সময় ভবিষ্যতের সফলতার রহস্য হিসেবে বর্তমানের ব্যর্থতাকে দেখেছেন। ১৯৭২ সালে পল এবং বিল গেটস ৮ বিট মাইক্রোপ্রসেসরের মাধ্যমে ট্রাফ-ও-ডেটা নামে নতুন এক ব্যবসা চালু করার পরিকল্পনা নেন। কিন্তু তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১১ সালে অ্যালেন নিউজ উইক-এ লিখেছিলেন, সেই ব্যর্থতা যে পরবর্তি সফলতার বীজ তা আমি বুঝেছিলাম। ভবিষ্যতে যে আরো কম দামের ওই মাইক্রোচিপই কম্পিউটার চালাবে তা আমি বুঝেছিলাম। আর তারই ধারাবাহিকতায় আজকের মাইক্রোসফট।

৮. ২০১২ সালে জে পি মর্গান প্রতিষ্ঠানটি বেশ সমস্যার মুখোমুখি হয়। এর লন্ডন-ভিত্তিক এক শাখার ধারাবাহিক ভুল নীতির কারণে ৫ বিলিয়ন ডলার লোকসান গুনতে হয়। এর সিইও জেমি ডিমনকে বেশ কড়া চিঠি পেতে হয় শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে। একে শিক্ষা ধরে নিয়ে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন। এক পর্যায়ে সবার মনে শান্তি এনে দেন ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে।

৯. হিউলেট-প্যাকার্ড এর সিইও মেগ হুইটম্যান ২০১০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হতে ১৪৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন এবং ব্যর্থ হন। কিন্তু এই বড় ভুল তাকে শিক্ষা দেয় যে, ভালো রাজনীতিবিদ না হতে পারলেও তিনি একজন ভালো কমিউনিকেটর হতে পারবেন। আর তখনই তিনি উপলব্ধি করেন, এই মস্তবড় ভুল তাকে বুঝিয়ে দেয় যে, একজন এক্সিকিউটিভ হিসেবে এতদিন ধরে তার কী কী ভুল ছিলো এবং তখন থেকে তিনি আরো নিখুঁত একজন সিইও।

১০. ৯০ এর দশকে গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন ফ্যাক্সের মাধ্যমে পিজা সরবরাহের একটি আইডিয়া মাথায় আনেন। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় তা ব্যর্থ হয়। এখান থেকে ব্রিন বোঝেন যে, একে সফল করতে হলে আরো বড় পরিকল্পনা নিতে হবে। আর সেই পরিকল্পনার পেছনে যেতেই সফলতা দেখেছেন তিনি।

সফল যারা কেমন তারা